শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২৮ অপরাহ্ন
ব্রাজিলের আনন্দ-উৎসব নিয়ে কেউ কেউ সমালোচনার তীরে বিদ্ধ করছেন। বিশেষ করে প্রতিটি গোলের পর যেভাবে সমর্থকদের সামনে গিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন তা কারও কারও কাছে দৃষ্টিকটু মনে হচ্ছে। যতই আলোচনা-সমালোচনা হোক না কেন, পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের তাতে কি? এটা যে তাদের ঐতিহ্য। ঐতিহ্যের ধারক হয়ে শুধু তা পালন করে যাচ্ছেন নেইমার-ভিনিসিয়ুসরা।
আজ দোহার এডুকেশন সিটিতে রাতে আরও একটি উৎসব করার অপেক্ষায় সেলেসাওরা। চিরাচরিত সেই সাম্বা নৃত্য নেচে আনন্দে ভাসাতে চাইছেন সমর্থকদের। আর তা করতে হলে কোয়ার্টার ফাইনালে হারাতে হবে ক্রোয়েশিয়াকে। সেই কাজটি মাঠে করার জন্য প্রস্তুত হলুদ জার্সিধারীরা। তবে ক্রোয়েশিয়াও ছেড়ে কথা বলবে না।
ব্রাজিলের নান্দনিক পারফরম্যান্স সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিশেষ করে শেষ ষোলোর লড়াইয়ে যেভাবে দক্ষিণ কোরিয়াকে বিধ্বস্ত করেছে, তা ছিল চোখের শান্তি। তাদের আক্রমণভাগের কাছে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কোরিয়া।
বিরতির আগে যেভাবে চার গোল আদায় করে নিয়েছে তাতে ব্রাজিলকে নিয়ে আশাবাদী না হয়ে পারা যায় না। তবে এবার বাধা ক্রোয়েশিয়া। গতবারের রানার্সআপ। প্রতিপক্ষ হিসেবে কোরিয়ার চেয়ে শক্তিশালী। তাই ম্যাচটি খুব সহজ হবে তা কিন্তু নয়। অন্তত লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিলছে।
৬১ বছর বয়সী কোচ তিতে প্রতিপক্ষকে হালকা করে দেখছেন না। সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন,‘তাদের দক্ষ খেলোয়াড় রয়েছে। টেকনিক্যাল সামর্থ্য আছে। আমি দৃষ্টি দিয়েছি আগের মতো ভালো পারফরম্যান্সের দিকে। দৃষ্টিনন্দন ফুটবল খেলতে চাই।’
ফুরফুরে মেজাজে থাকা ব্রাজিল দলে ডিফেন্ডার অ্যালেক্স সান্দ্রোর চোট কিছুটা ভাবিয়ে তুলছে কোচকে। যদিও শেষ অনুশীলনের পর ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে।
নেইমার-রিচার্লিসন-ভিনিসিয়ুসদের সামনে ক্রোয়েশিয়া বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এই পর্যায়ে আসতে ক্রোটদের বেশ গলদঘর্ম হতে হয়েছে। বিশেষ করে জাপানের বিপক্ষে জিততে হয়েছে টাইব্রেকারে। এছাড়া আগের চারবারের মুখোমুখিতে কখনও ক্রোয়াটরা জিততে পারেনি। তিনটিতে ব্রাজিল ও একটি ম্যাচ হয়েছে ড্র। এরমধ্যে বিশ্বকাপে দুবার দেখা হয়েছিল। ২০০৬ সালে ১-০ ও ২০১৪ সালে ৩-১ গোলে জয় এসেছিল। এছাড়া গত বিশ্বকাপের চেয়ে এবারের দলটির শক্তি কিছুটা ম্রিয়মাণ মনে হচ্ছে।
বাস্তব অবস্থা বুঝেই ক্রোয়াটদের কোচ জ্লাতকো দালিচ বলেছেন,‘ আমরা ব্রাজিলের বিপক্ষে তেমন কোনও পরিবর্তন আনতে চাইছি না। একটি হলে হতে পারে। শেষ ম্যাচটিতে অতিরিক্ত সময়ের পর টাইব্রেকার পর্যন্ত গড়িয়েছিল। সেখান থেকে রিকভরি হচ্ছে দল। আমরা এখন পর্যন্ত সাফল্য পেয়ে আসছি। অত্যন্ত সফল দল বলতে পারেন। এটা ক্রোয়েশিয়ার জন্য ভালো। আর প্রতিপক্ষের কথা কি বলবো। বিশ্বকাপে বড় ফেভারিট দল তারা। তাদের বিপক্ষে লড়াই করার জন্য আমাদের তৈরি হতে হচ্ছে।’
নেইমার-ভিনিসিয়ুস-রিচার্লিসনদের সামনে লুকা মদ্রিচের দল কতটুকু প্রতিরোধ গড়তে পারে, তা-ই এখন দেখার অপেক্ষায় ফুটবল অনুরাগীরা।